
বিশেষ প্রতিবেদন : কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অভূতপূর্ব সৃষ্টির পাতায় শুধুমাত্র একজন কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক এর ই পরিচয় মেলেনা, কবির একাধারে কৃষিকাজ এর প্রতিও যথেষ্ট অবদান এর পরিচয় মেলে ।জানা যায়, ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জামাই নগেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলি ও বন্ধুপুত্র সন্তোষ মজুমদারকে পাঠিয়েছিলেন বিদেশে কৃষিতে উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য। শ্রীনিকেতনেও কৃষি বিষয়ক নিয়মিত চর্চা করতেন। তাঁরই অনুপ্রেরণায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক আবিষ্কার করেছেন এক নতুন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়ার নামকরণ হয়েছে কবিগুরুর নামে।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক বোম্বা দাম ও পাঁচ সহকারী গবেষক পাঁচ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করেছেন। তারা নতুন প্রজাতির এই ব্যাকটেরিয়ার নামকরণ করেছেন ‘প্যান্টোইয়া টেগোরি’।
পাঁচ গবেষক রাজু বিশ্বাস, অরিজিৎ মিশ্র, সন্দীপ ঘোষ, অভিনব চ্ক্রবর্তী ও পূজা মুখার্জী তাঁরা ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়াতে এই ব্যাক্টেরিয়ার সন্ধান পান। সন্ধানের পরেই, তাঁরা ব্যাক্টেরিয়ার ব্যাপারে সব বিস্তৃত ভাবে জানানAssociation Of Microbiologist of India কে। চলতি ডিসেম্বরেই ইন্ডিয়ান জার্নালের মাইক্রোবায়োলজি বিষয়ে এই খবরটি প্রকাশিত হয়।
ধান চাষের ক্ষেত্রে তথা কৃষিবিজ্ঞানে এক অভূতপূর্ব অবদান রাখবে এই ব্যাকটেরিয়া। কৃষিক্ষেত্রে, নাইট্রোজেন- ফসফরাস- পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সাধারণত, মাটিতে এগুলোর অভাব থাকলে, রাসায়নিক সারের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু , এতে মাটি দূষণের হার আরো বাড়ছে। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে এই ব্যাকটেরিয়া গুলো মাটির উর্বরতা বাড়াবে এবং মাটির দূষণও কমাবে।
নতুন প্রজাতির এই ব্যাকটেরিয়া কৃষিক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। এটি কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে এবং পরিবেশ দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিক জানিয়েছেন , “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কৃষিক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। তারই প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা নতুন প্রজাতির এই ব্যাকটেরিয়ার নামকরণ করেছি ‘প্যান্টোইয়া টেগরী’।”